ট্রেনে কর্তব্যরত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য কর্তৃক স্থানীয় মোছাঃ রিতা (২২) নামে এক ট্রেন যাত্রীকে প্রকাশ্যে মারধরের ঘটনায় নাজমুল বিশ্বাস নামে এক পুলিশ সদস্যকে লাঞ্চিত করেছে বিক্ষুব্দ জনতা। বুধবার (১৭ এপ্রিল) সকাল ৮টার দিকে ময়মনসিংহের গৌরীপুর রেলওয়ে জংশন প্লাটফর্মে এ ঘটনা ঘটে।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হাতে মারধরের শিকার হওয়া নারী গৌরীপুর উপজেলার শালীহর গ্রামের জুলহাস মিয়ার স্ত্রী।
মোছাঃ রিতা বলেন- ‘ঘটনার দিন সকালে চট্রগ্রাম যাওয়ার উদ্দেশ্যে আমি ও আমার পরিবারের চার সদস্য নাসরিাবাদ ৩০৮ ট্রেনের জন্য গৌরীপুর জংশনের প্লাটফর্মে অপেক্ষা করতে থাকি। ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসা এ ট্রেনটি ৭টা ৫০ মিনিটে স্টেশনে প্রবেশ করার পর ট্রেনের বগিতে উঠতে গেলে কর্তব্যরত পুলিশ, আরএনবি সদস্য ও পয়েন্টসম্যান রফিকুল ইসলাম আমাদের বাঁধা দেন। এসময় তারা আমাদের নিকট চট্রগ্রামের ভাড়া বাবাদ ৪ হাজার টাকা ভাড়া দাবি করেন। তাদের প্রস্তাবে আমি ২ হাজার টাকা ভাড়া দিতে রাজি হলেও এতে অপরাগতা জানান কর্তব্যরত আইন-শঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এ নিয়ে কথাকাটির এ পর্যায়ে পয়েন্টসম্যান রফিকুল ইসলাম আমাকে থাপ্পর মেরে মাটিতে ফেলে দেন এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আমাকে ও আমার পরিবারের সদস্যদের এলোপাথারীভাবে মারধর করেন। আমি ন্যাক্কারজনক এই হামলার বিচার চাই। ’
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান-নারী ট্রেন যাত্রীকে মারধরের ঘটনায় উপস্থিত বিক্ষুব্দ জনতা তাৎক্ষণিক এক পুলিশ সদস্যকে লাঞ্চিত করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান- উল্লেখিত এ ট্রেনের একটি বগির নিয়ন্ত্রণ থাকে কর্তব্যরত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হাতে। মোটা অংকের ভাড়ার বিনিময়ে তারা ট্রেনযাত্রীদের উঠতে দেন ওই বগিতে। এ কাজে সহযোগিতা করে থাকেন স্টেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আইন-শৃঙ্খলার বাহিনীর সদস্যরা।
গৌরীপুর স্টেশনের রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মীর্জা মোহাম্মদ মুক্তা জানান- উল্লেখিত ট্রেনটি স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়ার পর স্থানীয় কয়েকজন গৌরীপুর পুলিশ ফাঁড়ির সদস্য নাজমুল বিশ^াসকে লাঞ্চিত করে। এ ঘটনায় স্থানীয় জুলহাস মিয়া (৩০), সাহাবুদ্দিন শেখ (২০) ও আলী হোসেন (১৯) কে আটক করা হয়েছে। পুলিশ সদস্যকে মারধরের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
গৌরীপুর স্টেশনের আরএনবি ইনচার্জ মোরশেদ আলম জানান- নারী যাত্রীকে মারধরের ঘটনার সঙ্গে গৌরীপুর স্টেশনের কর্তব্যরত কোন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য জড়িত নন। ঘটনাটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছেন তিনি।
গৌরীপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মোঃ সফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান- ঘটনাটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এদিকে স্থানীয় লোকজন নারী ট্রেনযাত্রীকে মারধরের ঘটনায় জড়িত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও স্টেশনের কর্মচারীদের বিচার দাবি করেছেন।
সবার আগে আমরা আছি আপনার সাথে