Dhaka ০৯:৪৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ওয়াল্ড ব্যাংকের সহায়তায় বিএনপির দুই নেতার প্রকল্প পরিদর্শন

  • জাহাঙ্গীর আলম
  • Update Time : ১২:২৭:৪২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫
  • ১৬০ Time View

প্রকাশের সময় 30/10/2025

কক্সবাজারে ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের সহায়তায় ব্র্যাকের ‘PLEASE’ প্রকল্প পরিদর্শন করলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. জিয়াউদ্দিন হায়দার এবং বিএনপি চেয়ারপারসনের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির বিশেষ সহকারী ড. সাইমুম পারভেজ।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল – বিএনপি এর উপদেষ্টা কমিটির সদস্য, বিশিষ্ট জনস্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞ ড. জিয়াউদ্দিন হায়দার আজ কক্সবাজারে ব্র্যাক কর্তৃক বাস্তবায়িত ও ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের আর্থিক সহায়তাপ্রাপ্ত PLEASE (Plastic Waste Recycling for Livelihood, Environment and Sustainability Enhancement) প্রকল্প পরিদর্শন করেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিএনপির বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির বিশেষ সহকারী ও গবেষক ড. সাইমুম পারভেজ।
PLEASE প্রকল্পটি বাংলাদেশের অন্যতম উদ্ভাবনী ও পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ, যার লক্ষ্য—প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে টেকসই অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে রূপান্তর করা। প্রকল্পটি সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে নাগরিকদের বর্জ্য পৃথকীকরণে উৎসাহিত করে, সংগ্রহ ও নিরাপদ নিষ্পত্তি নিশ্চিত করে এবং সংগৃহীত প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহার করে তৈরি করছে জলবায়ু সহনশীল, টেকসই ও মানসম্মত প্লাস্টিক আসবাবপত্র। এই প্রকল্পটি শুধুমাত্র পরিবেশ সুরক্ষা নয়, বরং সামাজিক সচেতনতা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও স্থানীয় অর্থনীতিকে গতিশীল করার একটি অনন্য দৃষ্টান্ত। প্লাস্টিক বর্জ্যকে যদি সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা করা যায়, তবে সেটি হতে পারে বাংলাদেশের সবুজ অর্থনীতির এক নতুন দিগন্ত।

ড. হায়দার বলেন, বিএনপি তার ৩১ দফা রাষ্ট্র মেরামতের এজেন্ডাতে পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলাকে বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়েছে। এই এজেন্ডার অন্তর্ভুক্ত অন্যতম প্রতিশ্রুতি হলো—দেশব্যাপী বর্জ্য সংগ্রহ, পৃথকীকরণ, নিরাপদ নিষ্পত্তি ও পুনর্ব্যবহারের একটি সমন্বিত জাতীয় ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা।

তিনি বলেন,

“বর্তমান বাংলাদেশে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রায় অদৃশ্য—রাস্তা, নদী ও খালের পাশে অগণিত বর্জ্য ফেলায় পরিবেশ দূষণ বাড়ছে, রোগবালাই ছড়াচ্ছে, আর অর্থনীতি হারাচ্ছে তার উৎপাদনশীল শক্তি। তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি এই অচলাবস্থা ভেঙে দেবে। আমরা একটি এমন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই যেখানে প্রতিটি নাগরিকের অংশগ্রহণে বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তর করা হবে।”

PLEASE প্রকল্পের অভিজ্ঞতা থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। এই মডেলটি যদি প্রমাণিতভাবে কার্যকর ও অর্থনৈতিকভাবে টেকসই হয়, তাহলে এটি দেশব্যাপী সম্প্রসারণ বা পুনরাবৃত্তির পরিকল্পনা গ্রহণ করা যাবে। কক্সবাজারের এই মডেল হতে পারে বাংলাদেশের শহর ও গ্রামীণ এলাকায় টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আদর্শ উদাহরণ।

ড. হায়দার তাঁর সফরকালে প্রকল্পে কর্মরত নারী ও তরুণ কর্মীদের সঙ্গে আলাপ করেন এবং তাঁদের উদ্যমের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন,

“এই প্রকল্পের মাধ্যমে স্থানীয় জনগণ বিশেষত নারী ও তরুণেরা বিকল্প আয়ের সুযোগ পাচ্ছে। একদিকে পরিবেশ রক্ষা হচ্ছে, অন্যদিকে তৈরি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থান—এটাই টেকসই উন্নয়নের প্রকৃত রূপ।”

তিনি আরও বলেন,

“বিএনপি সরকার গঠন করলে প্রতিটি পৌরসভা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র স্থাপন করা হবে, যেখানে স্থানীয় সরকার, বেসরকারি খাত ও জনগণ একসঙ্গে কাজ করবে। এভাবেই আমরা একটি ‘Green Bangladesh’ গড়ে তুলব—যেখানে পরিবেশ, স্বাস্থ্য ও অর্থনীতি একে অপরের পরিপূরক হবে।”

ড. হায়দার তাঁর বক্তব্যে বলেন,

“তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপির রাষ্ট্র মেরামতের এজেন্ডা শুধু রাজনৈতিক সংস্কার নয়—এটি একটি সমন্বিত জাতীয় পুনর্জাগরণের রূপরেখা। যেখানে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, খাদ্য, পরিবেশ, কর্মসংস্থান এবং ডিজিটাল রূপান্তর পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত থাকবে। সেই লক্ষ্যেই আমরা আজ মাঠে নেমেছি, শিখছি, পর্যবেক্ষণ করছি, এবং সফল মডেলগুলো ভবিষ্যতের রাষ্ট্র পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করছি।”

তিনি আশা প্রকাশ করেন, পরিবেশ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একদিন দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম উদাহরণ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে, যদি রাজনৈতিক সদিচ্ছা, প্রযুক্তি, স্থানীয় উদ্ভাবন ও জনগণের অংশগ্রহণ একসাথে কাজ করে। স্বাস্থ্যসম্মত ও টেকসই বাংলাদেশ গড়াই এখন আমাদের জাতীয় অঙ্গীকার।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

md rezaul hasan

খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় বিএনপির নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

ওয়াল্ড ব্যাংকের সহায়তায় বিএনপির দুই নেতার প্রকল্প পরিদর্শন

Update Time : ১২:২৭:৪২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫

প্রকাশের সময় 30/10/2025

কক্সবাজারে ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের সহায়তায় ব্র্যাকের ‘PLEASE’ প্রকল্প পরিদর্শন করলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. জিয়াউদ্দিন হায়দার এবং বিএনপি চেয়ারপারসনের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির বিশেষ সহকারী ড. সাইমুম পারভেজ।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল – বিএনপি এর উপদেষ্টা কমিটির সদস্য, বিশিষ্ট জনস্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞ ড. জিয়াউদ্দিন হায়দার আজ কক্সবাজারে ব্র্যাক কর্তৃক বাস্তবায়িত ও ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের আর্থিক সহায়তাপ্রাপ্ত PLEASE (Plastic Waste Recycling for Livelihood, Environment and Sustainability Enhancement) প্রকল্প পরিদর্শন করেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিএনপির বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির বিশেষ সহকারী ও গবেষক ড. সাইমুম পারভেজ।
PLEASE প্রকল্পটি বাংলাদেশের অন্যতম উদ্ভাবনী ও পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ, যার লক্ষ্য—প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে টেকসই অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে রূপান্তর করা। প্রকল্পটি সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে নাগরিকদের বর্জ্য পৃথকীকরণে উৎসাহিত করে, সংগ্রহ ও নিরাপদ নিষ্পত্তি নিশ্চিত করে এবং সংগৃহীত প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহার করে তৈরি করছে জলবায়ু সহনশীল, টেকসই ও মানসম্মত প্লাস্টিক আসবাবপত্র। এই প্রকল্পটি শুধুমাত্র পরিবেশ সুরক্ষা নয়, বরং সামাজিক সচেতনতা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও স্থানীয় অর্থনীতিকে গতিশীল করার একটি অনন্য দৃষ্টান্ত। প্লাস্টিক বর্জ্যকে যদি সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা করা যায়, তবে সেটি হতে পারে বাংলাদেশের সবুজ অর্থনীতির এক নতুন দিগন্ত।

ড. হায়দার বলেন, বিএনপি তার ৩১ দফা রাষ্ট্র মেরামতের এজেন্ডাতে পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলাকে বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়েছে। এই এজেন্ডার অন্তর্ভুক্ত অন্যতম প্রতিশ্রুতি হলো—দেশব্যাপী বর্জ্য সংগ্রহ, পৃথকীকরণ, নিরাপদ নিষ্পত্তি ও পুনর্ব্যবহারের একটি সমন্বিত জাতীয় ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা।

তিনি বলেন,

“বর্তমান বাংলাদেশে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রায় অদৃশ্য—রাস্তা, নদী ও খালের পাশে অগণিত বর্জ্য ফেলায় পরিবেশ দূষণ বাড়ছে, রোগবালাই ছড়াচ্ছে, আর অর্থনীতি হারাচ্ছে তার উৎপাদনশীল শক্তি। তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি এই অচলাবস্থা ভেঙে দেবে। আমরা একটি এমন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই যেখানে প্রতিটি নাগরিকের অংশগ্রহণে বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তর করা হবে।”

PLEASE প্রকল্পের অভিজ্ঞতা থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। এই মডেলটি যদি প্রমাণিতভাবে কার্যকর ও অর্থনৈতিকভাবে টেকসই হয়, তাহলে এটি দেশব্যাপী সম্প্রসারণ বা পুনরাবৃত্তির পরিকল্পনা গ্রহণ করা যাবে। কক্সবাজারের এই মডেল হতে পারে বাংলাদেশের শহর ও গ্রামীণ এলাকায় টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আদর্শ উদাহরণ।

ড. হায়দার তাঁর সফরকালে প্রকল্পে কর্মরত নারী ও তরুণ কর্মীদের সঙ্গে আলাপ করেন এবং তাঁদের উদ্যমের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন,

“এই প্রকল্পের মাধ্যমে স্থানীয় জনগণ বিশেষত নারী ও তরুণেরা বিকল্প আয়ের সুযোগ পাচ্ছে। একদিকে পরিবেশ রক্ষা হচ্ছে, অন্যদিকে তৈরি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থান—এটাই টেকসই উন্নয়নের প্রকৃত রূপ।”

তিনি আরও বলেন,

“বিএনপি সরকার গঠন করলে প্রতিটি পৌরসভা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র স্থাপন করা হবে, যেখানে স্থানীয় সরকার, বেসরকারি খাত ও জনগণ একসঙ্গে কাজ করবে। এভাবেই আমরা একটি ‘Green Bangladesh’ গড়ে তুলব—যেখানে পরিবেশ, স্বাস্থ্য ও অর্থনীতি একে অপরের পরিপূরক হবে।”

ড. হায়দার তাঁর বক্তব্যে বলেন,

“তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপির রাষ্ট্র মেরামতের এজেন্ডা শুধু রাজনৈতিক সংস্কার নয়—এটি একটি সমন্বিত জাতীয় পুনর্জাগরণের রূপরেখা। যেখানে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, খাদ্য, পরিবেশ, কর্মসংস্থান এবং ডিজিটাল রূপান্তর পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত থাকবে। সেই লক্ষ্যেই আমরা আজ মাঠে নেমেছি, শিখছি, পর্যবেক্ষণ করছি, এবং সফল মডেলগুলো ভবিষ্যতের রাষ্ট্র পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করছি।”

তিনি আশা প্রকাশ করেন, পরিবেশ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একদিন দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম উদাহরণ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে, যদি রাজনৈতিক সদিচ্ছা, প্রযুক্তি, স্থানীয় উদ্ভাবন ও জনগণের অংশগ্রহণ একসাথে কাজ করে। স্বাস্থ্যসম্মত ও টেকসই বাংলাদেশ গড়াই এখন আমাদের জাতীয় অঙ্গীকার।