বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অন্যতম দল বিএনপি। আর এ দলটি আজকের অবস্থানে আসার পেছনে রয়েছে বেশকিছু নেতার অনস্বীকার্য অবদান। এসব নেতাদের সিংহভাগই এক সময় আন্দোলনের মাধ্যমে রাজপথ কাঁপাতো। তেমনি রাজপথ কাঁপানো বিএনপির একজন অন্যতম নেতা সময়ের সাহসী সন্তান কেন্দ্রীয় বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য ও নেত্রকোনা জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব আলহাজ্ব ডক্টর রফিকুল ইসলাম হিলালী। তিনি তাঁর রাজনৈতিক জীবনে অনেক লড়াই সংগ্রাম করে বহু চড়াই উৎরাই পেরিয়ে আজকের অবস্থানে এসেছেন। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ছাত্র জীবনেই রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হয়ে জীবন বাজী রেখে দলের নিবেদিত হয়ে কাজ করেন।
তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন সময়েই ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে অগ্রণীয় ভূমিকা পালন করেন। নিয়মিত মিটিং মিছিলে অংশগ্রহন করাসহ সিনিয়র নেতাবৃন্দ কর্তৃক তাঁর উপর অর্পিত বিভিন্ন দায়িত্ব সততা ও নিষ্ঠার সাথে পালন করে সকলের প্রিয় পাত্র হন। তিনি তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে অনেক ত্যাগ তীতিক্ষার মাধ্যমে আজকের অবস্থানে পৌঁছেছেন।
রাজপথের পরীক্ষিত নেতা হিসেবে দলের দূর্দিনে সব সময়ই দলীয় হাই কমান্ডের নির্দেশিত কর্মসূচি সম্মুখভাগে থেকে জীবনের মায়া ত্যাগ করে বাস্তবায়ন করেছেন। দলের দূর্দিনের কান্ডারী আলহাজ্ব ডক্টর রফিকুল ইসলাম হিলালী ১৯৮৭ সালে আলাউল হলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। পরের বছর ১৯৮৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয় শাখার প্রচার সম্পাদক ও ১৯৯০ সালে সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৯৩ সভাপতি পদ লাভ করেন। তিনি ১৯৯৫ সালে কেন্দ্রীয় যুবদলের সদস্য পদ পান এবং ১৯৯৭ সালে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে ২০০২ সালে কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ-বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মনোনীত হন।
বর্তমানে তিনি কেন্দ্রীয় বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য ও নেত্রকোনা জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব হিসেবে দলীয় নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করে সামনের দিকে এগিয়ে চলেছেন। তিনি নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার কেন্দুয়া পৌর সদরের বাদে আঠার বাড়ি মহল্লার অধিবাসী। অত্যন্ত তীক্ষ্ণ বুদ্ধিমান ও চৌকস জ্ঞানের অধিকারী রফিকুল ইসলাম ব্যাক্তি জীবনে খুবই সদালাপী ও মিশুক প্রকৃতির মানুষ। সাধারণ জনগণসহ দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে অমায়িক আচরণের জন্য হিলালীর অনেক সুনাম রয়েছে। অনেক ঘাত প্রতিঘাত পেরিয়ে রাজনীতি করায় দলের দূর্দিনের কান্ডারী আপোষহীন নেতা হিসেবেই স্বীকৃত হয়েছেন।
শৈশব কৈশোরে প্রাথমিকের গন্ডী পেরিয়ে কেন্দুয়া জয়হরি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৮৪ সালে লেটার মার্কসসহ প্রথম বিভাগে এসএসসি এবং ১৯৮৬ সালে কেন্দুয়া ডিগ্রী কলেজ থেকে লেটার মার্কসসহ এইচএসসি পাস করেন। পরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৯ সালে দ্বিতীয় বিভাগে অনার্স ও ১৯৯০ সালে দ্বিতীয় বিভাগে মাস্টার্স কমপ্লিট করেন। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের অবদানের উপর ২০১২ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।
বিএনপির স্থানীয় রাজনীতিতে আলহাজ্ব ডঃ রফিকুল ইসলাম হিলালী ২০০৮ সালে ও ২০১৬ সালে কেন্দুয়া উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০১৩ সালে ২০-দলীয় ঐক্য জোটের সংগ্রাম কমিটির আহবায়কের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং কেন্দ্রীয় অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের গণ্ডি পেরিয়ে অত্যান্ত ত্যাগী, সাহসী নেতা হিসেবে সুপরিচিতি পান। রফিকুল ইসলাম হিলালী ২০১৪ সালে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মনোনীত হন। পুনরায় ২০১৬ সালে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মনোনীত রফিকুল ইসলাম হিলালী ২০২০ সালে নেত্রকোনা জেলা বিএনপির’ও সদস্য সচিব এর দায়িত্ব¡ প্রাপ্ত হন।
এছাড়াও তিনি নেত্রকোনা-৩ আসনে ২০০৬ সালে তিনি প্রথম ধানের শীর্ষের মনোনয়ন পান। কিন্তু এ নির্বাচন হয়নি। পরে তিনি ২০০৮ সালে পুনরায় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচন করে নেত্রকোনা জেলায় সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে পরাজিত হন। ২০১৮ সালের নির্বাচনেও নেত্রকোনা ৩ আসনে ধানের শীষের নমিনি ছিলেন তিনি। দলীয় নেতাকর্মীদের নিকট অত্যান্ত সৎ,ত্যাগী, সাহসী, কর্মীবান্ধব ও সুবক্তা হিসেবে ব্যাপক কদর রয়েছে তাঁর। শিক্ষা জীবন শেষে চাকুরী না নিয়ে সারা জীবন রাজনীতিতে আত্মনিয়োগ করে আজ তিনি একজন সফল রাজনৈতিক সংগঠক।
সম্প্রতি সম-সাময়িক বিষয়সহ চলমান রাজনীতি ও আগামীর রাজনীতি নিয়ে একান্ত সাক্ষাতকারে ড.রফিকুল ইসলাম হিলালী এ প্রতিবেদকের সাথে বিশদ আলোচনা করেন ।
একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বিভিন্ন প্রশ্নের বিস্তারিত উত্তর প্রদান করেন ।
সাক্ষাৎকারে ড.রফিকুল ইসলাম হিলালীকে প্রথমেই প্রশ্ন করা হয়-চলমান রাজনীতি ও আগামীর রাজনীতি নিয়ে আপনার ভাবনা কি?
এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন-চলমান রাজনীতি আমাদের দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং উন্নয়নের ধারাকে শক্তিশালী করার সুযোগ তৈরি করেছে। তবে, এখনো অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে—বৈষম্য দূর করা, সুশাসন প্রতিষ্ঠা, এবং জনসেবায় স্বচ্ছতা আনা। আমাদের রাজনীতি এখন এমন একটি পর্যায়ে এসেছে যেখানে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। আগামীর রাজনীতি নিয়ে আমি আশাবাদী। তরুণ প্রজন্মের উত্থান ও তাদের নতুন ভাবনা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সহায়ক হবে। প্রযুক্তি ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের উন্নয়নের মাধ্যমে আমরা আরও ভালো নেতৃত্ব ও সেবার ব্যবস্থা করতে পারবো। তবে এর জন্য আমাদের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় আরও সুশৃঙ্খলতা ও দূরদর্শিতা প্রয়োজন।
আমি বিশ্বাস করি, ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা, সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা, এবং জনগণের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে আমরা একটি সমৃদ্ধশালী ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হবো।
সাক্ষাৎকার গ্রহণকালে ধারাবাহিকভাবে করা বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর তিনি শান্তভাবে দৃঢ়তার সাথে প্রদান করেন ।
প্রশ্নঃ আপনার রাজনীতি কবে কখন থেকে শুরু। কার হাত ধরে রাজনীতিতে এসেছিলেন?
উত্তরঃআমি ১৯৮৫ সালে ছাত্রদলে যুগ্ন সম্পাদক হিসেবে কেন্দুয়া উপজেলা থেকে রাজনীতিতে প্রবেশ করি। রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার পেছনে মূলত জিয়াউর রহমানের আদর্শ এবং নেতৃত্বই আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে।
প্রশ্নঃ স্থানীয় রাজনীতিতে অনেক সময় দলীয় বিভক্তি লক্ষ্য করা যায় এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কি? যারা দলীয় গ্রুপিং করে তাদের উদ্দেশ্যে কি বলবেন?
উত্তরঃ দলীয় বিভক্তি একটি রাজনৈতিক দলের জন্য কখনোই সুস্থ লক্ষণ নয়। এটি দলকে দুর্বল করে তোলে এবং জনগণের স্বার্থকে প্রভাবিত করে। রাজনৈতিক দল মানেই দলীয় ঐক্য এবং সম্মিলিত প্রচেষ্টা, যা জনগণের কল্যাণের জন্য কাজ করার মূলমন্ত্র। বিভক্তি সেই ঐক্যের বিরুদ্ধে কাজ করে এবং দলকে তার লক্ষ্যে পৌঁছাতে বাধা দেয়।যারা দলীয় গ্রুপিং করে, তাদের উদ্দেশ্যে আমি বলবো, দলীয় আদর্শ ও লক্ষ্যকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিন। ব্যক্তিগত বা ক্ষুদ্র গোষ্ঠীগত স্বার্থের জন্য দলের বৃহত্তর স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত করা কখনোই কাম্য নয়। দলীয় ঐক্য ধরে রেখে কাজ করলে আমরা দলকে শক্তিশালী করতে পারবো এবং জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারবো। এখন সময় এসেছে নিজেদের স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে, দলের এবং দেশের উন্নয়নের জন্য একসাথে কাজ করার। ঐক্যই আমাদের শক্তি।
প্রশ্নঃ কেন্দ্রীয় নেতা হিসাবে আপনার নিজ এলাকায় বিভিন্ন কর্মসুচি বাস্তবায়নে স্থানীয় নেতা কর্মীদের সহযোগীতা কেমন পাচ্ছেন ?
উত্তরঃ আমার নির্বাচনী এলাকায় স্থানীয় নেতাকর্মীদের সহযোগিতা অত্যন্ত সন্তোষজনক এবং উৎসাহব্যঞ্জক। আমি কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় স্তরে সমন্বিতভাবে কাজ করছি। প্রতিটি কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নের জন্য তারা অত্যন্ত দায়িত্বশীলভাবে কাজ করছেন। দলের লক্ষ্য ও আদর্শকে সামনে রেখে, জনগণের সেবা এবং এলাকার উন্নয়নের জন্য আমরা একসাথে অগ্রসর হচ্ছি। তাদের সহযোগিতা ও কঠোর পরিশ্রমের জন্য আমি কৃতজ্ঞ এবং ইনশাআল্লাহ আমরা সবাই মিলে এবার একটি সুন্দর ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।
প্রশ্নঃ আপনার রাজনৈতিক জীবনের উত্থান পতনের কোন স্বরনীয় বিষয় রয়েছে কি? থাকলে এই বিষয় সম্পর্কে কিছু বলুন।
উত্তরঃ আমার রাজনৈতিক জীবনের উত্থান-পতনের স্মরণীয় ঘটনাগুলো গভীর ত্যাগ ও সংগ্রামের সাক্ষী। ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলাম এবং বিএনপির পতাকা ধরে রেখেছি। একাধিকবার কারাবরণ করেছি, এমনকি আমার বৃদ্ধ বাবাও রাজনৈতিক কারণে নির্যাতিত হয়েছেন। তবে এসব কখনোই আমাকে আদর্শ থেকে বিচ্যুত করতে পারেনি। আমাদের দলের ও জাতির স্বার্থে সব ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে রাজপথে প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছি। দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে এমন ত্যাগ-তিতিক্ষার সময়গুলোই আমার রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় অধ্যায়।
প্রশ্নঃ রাজনৈতিক পদপদবীই একজন নেতার আসল মাপকীঠি? একজন ত্যাগ কর্মীর গুরুত্ব কি ? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন- রাজনৈতিক পদপদবী একজন নেতার মর্যাদার প্রতীক হতে পারে, তবে তা কখনোই তার প্রকৃত মাপকাঠি নয়। একজন নেতার সত্যিকার মূল্যায়ন হয় তার ত্যাগ, সেবামূলক কাজ এবং জনসেবার মাধ্যমে। একজন ত্যাগী কর্মীর গুরুত্ব অপরিসীম, কারণ তারা নিরলসভাবে দল এবং আদর্শের জন্য কাজ করে, ব্যক্তিগত স্বার্থকে পেছনে রেখে। রাজনৈতিক পদের বাইরে থেকে তারা দলের মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করেন এবং দলের সাফল্যের পথে নিরলস পরিশ্রম করে যান। তাই, ত্যাগী কর্মীরাই প্রকৃতপক্ষে দলের আদর্শিক শক্তি এবং আন্দোলনের মেরুদণ্ড।
প্রশ্নঃ চলমান রাজনীতিতে তরুনদের ভুমিকা কতোটুকু গুরুত্ব পুর্ন?
উত্তরঃ চলমান রাজনীতিতে তরুণদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা দেশের ভবিষ্যৎ এবং সমাজের নতুন চিন্তা-চেতনার বাহক। তরুণদের উদ্যম, নতুনত্ব এবং শক্তি রাজনীতিকে গতিশীল করতে অপরিহার্য। তরুণরা ন্যায়বিচার, সমতা, এবং আধুনিকতার প্রতীক হিসেবে রাজনীতিতে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আসে। বিশেষ করে গণতান্ত্রিক আন্দোলন, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, এবং সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে তাদের ভূমিকা অতুলনীয়। তরুণদের সক্রিয় অংশগ্রহণই একটি উন্নত, সমৃদ্ধ, এবং ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনের মূল চাবিকাঠি।
প্রশ্নঃ রাজনীতি করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেলে কি ? হয়ে থাকলে এ পর্যন্ত আপনার নামে কয়টি মামলা হয়েছে কাতবার কারাবরণ করেছেন
উত্তরঃ হ্যাঁ, রাজনীতি করতে গিয়ে বহুবার হামলার শিকার হয়েছি এবং এখন পর্যন্ত আমার বিরুদ্ধে ৫৬টি গায়েবা মামলা হয়েছে। এ সকল মিথ্যা মামলায় আমাকে বহুবার কারাবরণ করতে হয়েছে। তবুও আমি থেমে থাকিনি এবং রাজপথে থেকে অনৈতিক সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে যাচ্ছি।
প্রশ্নঃ সুস্থ ধারার রাজনীতি চলমান রাখতে নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্যে আপনার নির্দেশনা কি ?
উত্তরঃ সুস্থ ধারার রাজনীতি চলমান রাখতে নেতা-কর্মীদের প্রতি আমার নির্দেশনা হলো, সবসময় আদর্শের প্রতি অবিচল থাকতে হবে এবং জনগণের কল্যাণকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। সহনশীলতা ও শান্তির পথে থেকে সংগঠিত আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। কোনো প্ররোচনায় পা না দিয়ে, সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে শক্ত অবস্থান নিয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকতে হবে। সংগঠনের শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং জনসেবা করার মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে।
;প্রশ্নঃ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কেন্দুয়া- আটপাড়া আসন থেকে মনোনয়ন বিষয়ে বিগত দিনের ন্যায় এবারও আপনি মনোনয়ন পাবেন বলে ; শতভাগ নিশ্চিত বলে মনে করেন কি?
উত্তরঃ আমি সব সময় দলের প্রতি অনুগত থেকেছি, রাজপথে থেকেছি, আমার ত্যাগ এবং নিষ্ঠা কম নয়। বিগত দিনে দলের প্রার্থিতায় তিনবার মনোনয়ন পেয়েছি আশা করি দল এবারও আমার ত্যাগ এবং কাজের মূল্যায়ন করবে। তবে সিদ্ধান্ত যাই হোক, আমি দলের জন্য কাজ চালিয়ে যাব। ইনশাআল্লাহ।
প্রশ্নঃ আগামী দিন গুলোতে শান্তিপুর্ন পরিবেশ বজায় রাখার লক্ষ্যে দলমত নির্বিশেষে কেন্দুয়া আটপাড়া বাসির সকল স্হরের জনগনের উদ্দেশ্যে আপনার বক্তব্য কি?
উত্তরঃ কেন্দুয়া-আটপাড়া বাসির সকল স্তরের জনগণের প্রতি আমার আন্তরিক আহ্বান, আসুন আমরা সবাই দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ থাকি এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখি। আমাদের এলাকার উন্নয়ন ও ভবিষ্যৎ নির্ভর করে শান্তি এবং স্থিতিশীলতার উপর। একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা রেখে আমরা সমাজের কল্যাণে কাজ করব। মতভেদ থাকতে পারে, কিন্তু আমাদের লক্ষ্য এক—আমাদের এলাকার মঙ্গল ও শান্তি। তাই আসুন, সকলে মিলে ঐক্যবদ্ধ থেকে শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের ভবিষ্যৎ নির্মাণ করি।
প্রশ্নঃ আপনার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে প্রত্যাশা অনুযায়ী প্রাপ্তির পুর্নতা পেয়েছেন কি?উত্তরঃ আমার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে আমি বলতে পারি যে, আমি কখনোই ব্যক্তিগত লাভের উদ্দেশ্যে রাজনীতি করিনি। আমার মূল লক্ষ্য ছিল দেশের উন্নয়ন এবং জনগণের কল্যাণ। যদিও বহুবার নির্যাতনের শিকার হয়েছি এবং বিভিন্ন বাধার সম্মুখীন হয়েছি, আমি কখনোই আমার আদর্শ এবং লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হইনি।
বিএনপি দলের জন্য আমি যে ত্যাগ স্বীকার করেছি, তা আমার বিশ্বাসের জন্যই। আমি জনগণের জন্য একটি ন্যায়বিচারপূর্ণ এবং উন্নত ভবিষ্যতের প্রত্যাশায় আছি। আমি যদি নির্বাচিত হই, তবে আমার উদ্দেশ্য থাকবে এলাকায় সুষ্ঠু রাজনীতির ধারা ফিরিয়ে আনা এবং ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করা। আমার ত্যাগের পূর্ণতা আমি তখনই অনুভব করব যখন আমি জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে সক্ষম হবো।
প্রশ্নঃ দেশে সুস্থধারার রাজনীতি চলমান রাখতে একজন কেন্দ্রীয় নেতা হিসাবে তৃনমুল নেতা কর্মীদের প্রতি আপনার আদেশ নিষেধ উপদেশ ও নির্দেশনা কি
উত্তরঃ দেশে সুস্থধারার রাজনীতি বজায় রাখতে একজন কেন্দ্রীয় নেতা হিসেবে আমার তৃণমূল নেতা-কর্মীদের প্রতি কিছু গুরুত্বপূর্ণ আদেশ এবং পরামর্শ আছে:
১. “সততা ও স্বচ্ছতা বজায় রাখা” সব স্তরের নেতা-কর্মীদের উচিত সততা এবং স্বচ্ছতা বজায় রাখা। জনগণের কাছে আমাদের প্রতিশ্রুতি এবং কর্মকাণ্ডের মধ্যে কোন রকম অসঙ্গতি না থাকা উচিত।
২. “জনগণের সাথে সংলাপ” আমাদের উচিত জনগণের সমস্যা এবং তাদের অভাব-অভিযোগ শোনা এবং তাদের সাথে সুস্থ সংলাপ রাখা। জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে।
৩. **বিভেদের বিরুদ্ধে লড়াই:** সকল ধরনের বিভেদ এবং সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। দলের মধ্যে ঐক্য বজায় রাখতে এবং একে অপরের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করতে হবে।
৪. **অনৈতিক কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকা:** যে কোন ধরনের অস্থিরতা, দুর্নীতি, এবং অস্বচ্ছতা থেকে বিরত থাকা উচিত। আমাদের উচিত নৈতিক ও আইনী কাঠামোর মধ্যে থেকেই কাজ করা।
৫. **অর্জন উদযাপন:** সাফল্য এবং অর্জনকে উদযাপন করতে হবে, কিন্তু তা যেন কখনো দলের আদর্শ থেকে বিচ্যুত না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
এই নির্দেশনা মেনে চললে আমরা দেশের রাজনৈতিক পরিবেশে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারব এবং জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হবো।
প্রশ্নঃবাংলাদেশকে উন্নয়নের সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যেতে আগামী দিনে সকল রাজনীতিবিদদের করনীয় কি হওয়া উচিত? এবং কেন্দুয়া আটপাড়া বাসীর উন্নয়নে আপনার ভবিষ্য পরিকল্পনা কি?
এমন প্রশ্নের উত্তরে ড.রফিকুল ইসলাম হিলালী বলেন-বাংলাদেশকে উন্নয়নের সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যেতে আগামী দিনে সকল রাজনীতিবিদদের করণীয় কিছু মূল দিক রয়েছে:
১. **দূরদর্শী পরিকল্পনা:** দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত যা দেশের সামাজিক, অর্থনৈতিক, এবং সাংস্কৃতিক চাহিদার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে।
২. **দুর্নীতি বিরোধী পদক্ষেপ:** দুর্নীতি এবং স্বজনপ্রীতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। সরকারের প্রতিটি স্তরে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
৩. **শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবা:** শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়ন করা আবশ্যক। এগুলি জাতির ভবিষ্যৎ উন্নয়নের মূল স্তম্ভ হিসেবে কাজ করবে।
৪. **অর্থনৈতিক উন্নয়ন:** শিল্প ও ব্যবসার পরিবেশ উন্নত করা, বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করা এবং উদ্যোক্তা উন্নয়ন করা জরুরি।
৫. **সামাজিক ন্যায়বিচার:** সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে, যেন সবাই সমান সুযোগ পায় এবং কোনো শ্রেণী বা গোষ্ঠী অগ্রসর হতে বাধাগ্রস্ত না হয়।
**কেন্দুয়া-আটপাড়া বাসীর উন্নয়নে আমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা:**
১. **অর্থনৈতিক উন্নয়ন:** স্থানীয় উদ্যোগ এবং ছোট-মাঝারি শিল্পের উন্নয়নের মাধ্যমে অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ঘটানো।
২. **পরিকল্পিত অবকাঠামো উন্নয়ন:** সড়ক, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য মৌলিক অবকাঠামোর উন্নয়ন করা।
৩. **শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ:** তরুণদের জন্য শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি করা এবং কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা।
৪. **স্বাস্থ্যসেবা:** উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে আধুনিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা।
৫. **বেকারত্ব নিরসন:** স্থানীয় যুবকদের কর্মসংস্থান তৈরি করা এবং উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ প্রদান করা।
এই পরিকল্পনাগুলি বাস্তবায়ন করলে কেন্দুয়া-আটপাড়া এলাকার সামগ্রিক উন্নয়ন সাধিত হবে এবং জনগণের জীবনমান উন্নত হবে।
ড.রফিকুল ইসলাম হিলালী সম্পর্কে দলীয় অনেক নেতাকর্মী জানান,তিনি অত্যন্ত সৎ, সাহসী ও ত্যাগী নেতা। মামলা হামলা হুমকি-ধমকিতে তিনি কোনদিন বিচলিত হননি। তিনি দলের বিরুদ্ধে চুল পরিমানও নীতিহারা হননি কোনদিন। কেন্দুয়া-আটপাড়ার দলীয় নেতাকর্মী ও সহকর্মীদের তিনি গাছের মতো ছায়া দিয়ে আগলে রেখেছেন।
একান্ত সাক্ষাৎকার ও বিভিন্ন আলাপচারিতার পরিশেষে ডঃরফিকুল ইসলাম হিলালী বলেন, শহীদ জিয়ার আদর্শে অনুপ্রানিত হয়ে আমি ছাত্র জীবন থেকেই বিএনপি রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হই এবং অধ্যবধি চুল পরিমানও বিচলিত হই নি । বিএনপি-ই আমার জীবন বিএনপি-ই আমার মরণ। দলকে আরও বেশী শক্তিশালী করতে আমি সকলের সহযোগিতা চাই।
সবার আগে আমরা আছি আপনার সাথে