প্রকাশের সময় 06/09/2023
নিউজ ডেস্ক।
নেত্রকোনার দুই উপজেলায় আকস্মিক ঝড়ের কবলে পড়ে নিখোঁজ দুই জেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার রাতে মোহনগঞ্জের ডিঙ্গাপোতা হাওরে দুলাল তালুকদারের মরদেহ ভেসে উঠলে স্থানীয়রা উদ্ধার করেন।
আর কলমাকান্দার সোনাডুবি হাওরে নিখোঁজ গুজাকলিয়া গ্রামের ঈশ্বরচন্দ্র দাসের ছেলে অনিল দাসের মরদেহ মঙ্গলবার সকালে উদ্ধার করা হয়।
এদিকে, ঝড়ে জেলায় অন্তত আট শতাধিক বাড়িঘরের ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
নিহত অনিল দাসের ছেলে অনিক চন্দ্র দাস জানান, গত রোববার রাত পৌনে ৩টার দিকে শুরু হয়ে প্রায় ৪০ মিনিট ধরে চলা ঝড়ে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। প্রতিদিনের মতো রোববার রাতে মাছ ধরতে হাওড়ে যান তার বাবা। রাত ২টা ৫৪ মিনিটে বাবার সঙ্গে মোবাইলে শেষ কথা হয়। তখন তিনি আবহাওয়া ভালো না বলে বাড়ি ফিরে আসবেন বলে জানান। এর কিছুক্ষণ পর ঝড় শুরু হয়। তারপর থেকে বাবা নিখোঁজ ছিলেন।
তিনি আরও জানান, মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে সেন্টু চন্দ্র দাস নামে এক জেলে হাওরে তার বাবার ভাসমান মরদেহ দেখতে পান। পরে খবর পেয়ে স্বজনরা মরদেহ উদ্ধার করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার রাত পৌনে ৩টার দিকে হঠাৎ করে ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়। ঝড়ে চারটি উপজেলার প্রায় দুই শতাধিক কাঁচা বাড়িঘর ও প্রচুর গাছপালা বিধ্বস্ত হয়। বেশকিছু স্থানে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে যায় ও খুঁটি হেলে যায়। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে কলমাকান্দা উপজেলায়। ওই উপজেলার আটটি ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক কাঁচা ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। কলমাকান্দায় অধিকাংশ এলাকায় এখনো বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ঝড়ের কবলে পড়ে কলমাকান্দার পোগলার ভানবিলে আব্দুল কুদ্দুস নামে এক জেলে মাছ ধরতে গিয়ে মারা যায়। এছাড়া দুই উপজেলায় দুই জেলে নিখোঁজ ছিলেন। পরে তাদের মরদেহ হাওরে ভেসে উঠলে উদ্ধার করা হয়।
এ বিষয়ে কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম বলেন, মঙ্গলবার সকালে অনিল দাসের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে নিহতের মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে আইনি প্রক্রিয়া শেষে স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
মোহনগঞ্জ থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, গুড়াউতরা গ্রামের সরল তালুকদারের ছেলে দুলাল তালুকদারের মরদেহ সোমবার রাতে উদ্ধার করা হয়েছে। পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এদিকে, নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক শাহেদ পারভেজ বলেন, সোমবার সন্ধ্যায় দুর্গাপর ঝড়ে বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। ঝড়ের কবলে পড়ে মারা যাওয়া তিন ব্যক্তির পরিবারকে নগদ ২০ হাজার করে টাকা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া পাঁচ উপজেলায় অন্তত আট শতাধিক বাড়িঘর বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।