Dhaka ০২:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নদে অবৈধ বালু উত্তোলনের মহোৎসব, ভাঙছে তীর, ঝুঁকিতে জমি বাড়িসহ অন্যান্য স্থাপনা

প্রকাশের সময় 11/06/2024

ব্রহ্মপুত্র নদে ইঞ্জিন চালিত নৌকা দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রির ফলে নদের তীরে দেখা দিয়েছে ভাঙন। সেই ভাঙনে বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে ছোট ছোট খাল। আর এসব খাল বেয়ে ফসলি জমি চলে যাচ্ছে নদগর্ভে। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে গ্রামের বসতবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মাদ্রাসাসহ অন্যান্য স্থাপনা। বর্তমানে ভাঙ্গন আতঙ্কে দিন কাটছে নদের তীরে বসবাসকারী স্থানীয় লোকজনের। ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ভাংনামারী ইউনিয়নের খোদাবক্সপুর গ্রামে বহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী এলাকায় মানবসৃষ্ট দুর্যোগের চিত্র এটি। জানা গেছে- বালু উত্তোলনকারী চক্রের সদস্যরা এলাকায় খুব প্রভাবশালী। বালু উত্তোলনের সময় তারা বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র সঙ্গে নিয়ে আসেন। প্রতিদিন ভোর ৫টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত প্রায় অর্ধশত নৌকা দিয়ে চলে বালু তোলার কাজ। উত্তোলিত বালু নদের দক্ষিনে ময়মনসিংহের সদর উপজেলার ভাবখালী ঘাটে বিক্রি করা হয়। প্রায় দেড় বছর ধরে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের এ মহোৎসব। যদি কেউ এ বালু উত্তোলনের প্রতিবাদ করে, তাহলে দেশীয় অস্ত্রের মহড়া দিয়ে তাকে মৃত্যুর হুমকী প্রদর্শন করা হয়ে থাকে। স্থানীয় কয়েকজন জানান- খোদাবক্সপুর গ্রামটি প্রাকৃতিকভাবে একটি বহ্মপুত্র নদ ভাঙন কবলিত এলাকা। গত একযুগে এ গ্রামের প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকার ফসলি জমি, বসতবাড়ীসহ অন্যান্য স্থাপনা বিলীন হয়ে গেছে নদী গর্ভে। ভিটে-মাটি হারিয়ে ইতিমধ্যে নিঃস্ব হয়েছে দেড় শতাধিক পরিবার। চার বছর ধরে প্রাকৃতিকভাবে নদের ভাঙন হ্রাস পেলেও ইঞ্জিন চালিত নৌকা দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারনে ফের দেখা দিয়েছে নদের তীর ভাঙন। দেড় বছর ধরে নদের তীর ঘেঁষে বালু উত্তোলন করায় গভীর গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। দিনদিন নদের তীর ভেঙ্গে সেই গভীর গর্তে বিলীন হচ্ছে নদের তীরবর্তী ফসলি জমি। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে নদের তীরবর্তী বসতবাড়ী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য স্থাপনা। একদিকে প্রাকৃতিকভাবে ও অন্যদিকে মানবসৃষ্ট দুর্যোগে নদের ভাঙনের মুখে বর্তমানে আতঙ্কে দিন কাটছে গ্রামবাসীর। তাই কৃত্রিম দুর্যোগের হাত থেকে নদের তীরবর্তী মানুষের ফসলি জমি, ভিটে-মাটিসহ অন্যান্য স্থাপনা রক্ষায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন স্থানীয় লোকজন। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ঘটনা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে লিখিতভাবে অবগত করেছেন তারা। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাকিল আহমেদ জানান- বহ্মপুত্র নদে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধকরনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

md rezaul hasan

Popular Post

ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টার প্রতিবাদে নেত্রকোনায় জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের বিক্ষোভ মিছিল

নদে অবৈধ বালু উত্তোলনের মহোৎসব, ভাঙছে তীর, ঝুঁকিতে জমি বাড়িসহ অন্যান্য স্থাপনা

Update Time : ০৯:০৩:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ জুন ২০২৪

প্রকাশের সময় 11/06/2024

ব্রহ্মপুত্র নদে ইঞ্জিন চালিত নৌকা দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রির ফলে নদের তীরে দেখা দিয়েছে ভাঙন। সেই ভাঙনে বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে ছোট ছোট খাল। আর এসব খাল বেয়ে ফসলি জমি চলে যাচ্ছে নদগর্ভে। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে গ্রামের বসতবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মাদ্রাসাসহ অন্যান্য স্থাপনা। বর্তমানে ভাঙ্গন আতঙ্কে দিন কাটছে নদের তীরে বসবাসকারী স্থানীয় লোকজনের। ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ভাংনামারী ইউনিয়নের খোদাবক্সপুর গ্রামে বহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী এলাকায় মানবসৃষ্ট দুর্যোগের চিত্র এটি। জানা গেছে- বালু উত্তোলনকারী চক্রের সদস্যরা এলাকায় খুব প্রভাবশালী। বালু উত্তোলনের সময় তারা বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র সঙ্গে নিয়ে আসেন। প্রতিদিন ভোর ৫টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত প্রায় অর্ধশত নৌকা দিয়ে চলে বালু তোলার কাজ। উত্তোলিত বালু নদের দক্ষিনে ময়মনসিংহের সদর উপজেলার ভাবখালী ঘাটে বিক্রি করা হয়। প্রায় দেড় বছর ধরে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের এ মহোৎসব। যদি কেউ এ বালু উত্তোলনের প্রতিবাদ করে, তাহলে দেশীয় অস্ত্রের মহড়া দিয়ে তাকে মৃত্যুর হুমকী প্রদর্শন করা হয়ে থাকে। স্থানীয় কয়েকজন জানান- খোদাবক্সপুর গ্রামটি প্রাকৃতিকভাবে একটি বহ্মপুত্র নদ ভাঙন কবলিত এলাকা। গত একযুগে এ গ্রামের প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকার ফসলি জমি, বসতবাড়ীসহ অন্যান্য স্থাপনা বিলীন হয়ে গেছে নদী গর্ভে। ভিটে-মাটি হারিয়ে ইতিমধ্যে নিঃস্ব হয়েছে দেড় শতাধিক পরিবার। চার বছর ধরে প্রাকৃতিকভাবে নদের ভাঙন হ্রাস পেলেও ইঞ্জিন চালিত নৌকা দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারনে ফের দেখা দিয়েছে নদের তীর ভাঙন। দেড় বছর ধরে নদের তীর ঘেঁষে বালু উত্তোলন করায় গভীর গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। দিনদিন নদের তীর ভেঙ্গে সেই গভীর গর্তে বিলীন হচ্ছে নদের তীরবর্তী ফসলি জমি। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে নদের তীরবর্তী বসতবাড়ী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য স্থাপনা। একদিকে প্রাকৃতিকভাবে ও অন্যদিকে মানবসৃষ্ট দুর্যোগে নদের ভাঙনের মুখে বর্তমানে আতঙ্কে দিন কাটছে গ্রামবাসীর। তাই কৃত্রিম দুর্যোগের হাত থেকে নদের তীরবর্তী মানুষের ফসলি জমি, ভিটে-মাটিসহ অন্যান্য স্থাপনা রক্ষায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন স্থানীয় লোকজন। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ঘটনা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে লিখিতভাবে অবগত করেছেন তারা। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাকিল আহমেদ জানান- বহ্মপুত্র নদে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধকরনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।