Dhaka ০৯:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হিজড়াদের মসজিদে এক কাতারে নামাজে দাঁড়ান সবাই

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৩:১০:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩১ মার্চ ২০২৪
  • ২০০ Time View

প্রকাশের সময় 31/03/2024

ময়মনসিংহ শহরতলির চর কালীবাড়ি এলাকায় সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের কিছু ঘরে বসবাস করেন প্রায় ৪০ জন হিজড়া। তাঁরা আর দশজনের সঙ্গে মসজিদে নামাজ আদায় করতে পারতেন না। এখন তাঁদের নিজেদের মসজিদ আছে, সেখানে সবাই এক কাতারে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করেন।

তবে হিজড়াদের মসজিদটি খুব সহজে হয়নি। সেই গল্প জানতে ফিরতে হবে কিছুটা পেছনের সময়ে। এ বিষয়ে সেখানকার কয়েকজন হিজড়ার সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, একদিন হিজড়াদের একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনার উম্মে সালমা তানজিয়া। অনুষ্ঠান শেষে তাঁরা কয়েকজন বিভাগীয় কমিশনারকে অনুরোধ করলেন একটি মসজিদ করে দেওয়ার জন্য। এর কিছুদিন পর চর কালীবাড়ি এলাকায় হিজড়াদের জন্য একটি কবরখানা করা হয়। পরে বিভাগীয় কমিশনার কবরখানার পাশে একটি মসজিদ করে দেন।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনার উম্মে সালমা তানজিয়া বলেন, ‘কয়েকজন হিজড়া ওই দিন অনুষ্ঠান শেষে কেঁদে কেঁদে বলেন, তাঁরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে মসজিদে নামাজ পড়তে যেতে পারেন না। পরে আমি খাস জায়গায় তাঁদের জন্য মসজিদের ব্যবস্থা করে দিই। মসজিদ নির্মাণের জন্য সরকারি কোনো বরাদ্দ দেওয়ার সুযোগ আমার কাছে ছিল না। তবে একজন দানশীল মানুষ টাকা দিয়ে সহযোগিতা করেন।’

মসজিদ উদ্বোধনের দিনের কথা স্মরণ করেন বিভাগীয় কমিশনার উম্মে সালমা তানজিয়া। তিনি বলেন, ‘মসজিদটি যে দিন আমি উদ্বোধন করতে যাই, সে দিন আমার মধ্যে কিছুটা ভয় ছিল এই ভেবে যে সাধারণ মানুষের মধ্যে কী প্রতিক্রিয়া হয়। তবে সেখানে গিয়ে দেখলাম, আমার আগেই এলাকার মুরব্বিরা এসে উপস্থিত। এখন তো শুনি রোজার মাসে ওই মসজিদে তারাবির নামাজ হচ্ছে। হিজড়ারা পবিত্র কোরআন শিখছেন। অনেক সাধারণ মানুষও ওই মসজিদে নামাজ পড়ছেন। খবরটি আমার কাছে দারুণ লেগেছে।’

গতকাল শনিবার চর কালীবাড়ির আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকায় কথা হয় জয়িতা তনু নামের এক হিজড়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, গত ৩১ জানুয়ারি বিভাগীয় কমিশনার তাঁদের জন্য করবখানা ও মসজিদটি উদ্বোধন করেন। নিজেদের শ্রমে তাঁরা মসজিদটি নির্মাণ করেন। এখানে নামাজের পাশাপাশি পবিত্র কোরআন শিক্ষার ব্যবস্থা আছে। একসঙ্গে ৬০ জন নামাজ আদায় করতে পারেন। মসজিদে আর দশজনের সঙ্গে নামাজ পড়তে পেরে তাঁরা আনন্দিত।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

md rezaul hasan

Popular Post

দীর্ঘ ১১ বছর পর নেত্রকোণার আটপাড়া উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

হিজড়াদের মসজিদে এক কাতারে নামাজে দাঁড়ান সবাই

Update Time : ০৩:১০:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩১ মার্চ ২০২৪

প্রকাশের সময় 31/03/2024

ময়মনসিংহ শহরতলির চর কালীবাড়ি এলাকায় সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের কিছু ঘরে বসবাস করেন প্রায় ৪০ জন হিজড়া। তাঁরা আর দশজনের সঙ্গে মসজিদে নামাজ আদায় করতে পারতেন না। এখন তাঁদের নিজেদের মসজিদ আছে, সেখানে সবাই এক কাতারে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করেন।

তবে হিজড়াদের মসজিদটি খুব সহজে হয়নি। সেই গল্প জানতে ফিরতে হবে কিছুটা পেছনের সময়ে। এ বিষয়ে সেখানকার কয়েকজন হিজড়ার সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, একদিন হিজড়াদের একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনার উম্মে সালমা তানজিয়া। অনুষ্ঠান শেষে তাঁরা কয়েকজন বিভাগীয় কমিশনারকে অনুরোধ করলেন একটি মসজিদ করে দেওয়ার জন্য। এর কিছুদিন পর চর কালীবাড়ি এলাকায় হিজড়াদের জন্য একটি কবরখানা করা হয়। পরে বিভাগীয় কমিশনার কবরখানার পাশে একটি মসজিদ করে দেন।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনার উম্মে সালমা তানজিয়া বলেন, ‘কয়েকজন হিজড়া ওই দিন অনুষ্ঠান শেষে কেঁদে কেঁদে বলেন, তাঁরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে মসজিদে নামাজ পড়তে যেতে পারেন না। পরে আমি খাস জায়গায় তাঁদের জন্য মসজিদের ব্যবস্থা করে দিই। মসজিদ নির্মাণের জন্য সরকারি কোনো বরাদ্দ দেওয়ার সুযোগ আমার কাছে ছিল না। তবে একজন দানশীল মানুষ টাকা দিয়ে সহযোগিতা করেন।’

মসজিদ উদ্বোধনের দিনের কথা স্মরণ করেন বিভাগীয় কমিশনার উম্মে সালমা তানজিয়া। তিনি বলেন, ‘মসজিদটি যে দিন আমি উদ্বোধন করতে যাই, সে দিন আমার মধ্যে কিছুটা ভয় ছিল এই ভেবে যে সাধারণ মানুষের মধ্যে কী প্রতিক্রিয়া হয়। তবে সেখানে গিয়ে দেখলাম, আমার আগেই এলাকার মুরব্বিরা এসে উপস্থিত। এখন তো শুনি রোজার মাসে ওই মসজিদে তারাবির নামাজ হচ্ছে। হিজড়ারা পবিত্র কোরআন শিখছেন। অনেক সাধারণ মানুষও ওই মসজিদে নামাজ পড়ছেন। খবরটি আমার কাছে দারুণ লেগেছে।’

গতকাল শনিবার চর কালীবাড়ির আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকায় কথা হয় জয়িতা তনু নামের এক হিজড়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, গত ৩১ জানুয়ারি বিভাগীয় কমিশনার তাঁদের জন্য করবখানা ও মসজিদটি উদ্বোধন করেন। নিজেদের শ্রমে তাঁরা মসজিদটি নির্মাণ করেন। এখানে নামাজের পাশাপাশি পবিত্র কোরআন শিক্ষার ব্যবস্থা আছে। একসঙ্গে ৬০ জন নামাজ আদায় করতে পারেন। মসজিদে আর দশজনের সঙ্গে নামাজ পড়তে পেরে তাঁরা আনন্দিত।