গৌরীপুরে ইতিহাস বিখ্যাত “খাজা উসমান খাঁ সিলভার পেন অ্যাওয়ার্ড-২০২৩” ঘোষণা: পুরস্কৃত হলেন দেশের বিভিন্ন জেলার ৭ জন গুণী ব্যক্তি

প্রকাশের সময় 11/01/2025

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে ১১ জানুয়ারি, শনিবার দুপুর ১২ টা ৩০ মিনিটে “খাজা উসমান খাঁ সিলভার পেন অ্যাওয়ার্ড-২০২৩” ঘোষণা করা হয়।  ক্রিয়েটিভ এসোসিয়েশন হিস্টোরিক্যাল সোসাইটি এন্ড লাইব্রেরী এর সেমিনার রুমে “খাজা উসমান খাঁ সিলভার পেন অ্যাওয়ার্ড-২০২৩” এর বিজয়ীদের নাম প্রকাশ করে। দি ইলেক্টোরাল কমিটি ফর খাজা উসমান খাঁ সিলভার পেন অ্যাওয়ার্ড-এর সহ-সভাপতি ও সরকারি টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইন্সটিটিউটের সাবেক সুপারিনটেনডেন্ট মোঃ আলী জিন্নাহর সভাপতিত্বে সমাজে বিভিন্ন অবদানের জন্য  ৭ গুণী ব্যক্তির নাম ঘোষণা করেন গৌরীপুর রিপোর্টার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হুদা লিটন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন গৌরীপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল আমিন,  প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রায়হান উদ্দিন সরকার, কবি মো. নূরুল আবেদীন, ডাঃ হিউবার্ড চক্রবর্তী, সাবেক উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি মীর হোসেন মিরন, সাংবাদিক উবায়দুর রহমান, ঝিন্টু দেবনাথ, লুৎফর রহমান খোকন, সুপক রঞ্জন উকিল, আশেক-ই-মোস্তফা, মোঃ রমজান আলী মুক্তি, এসিক ইয়ুথ এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও সাংবাদিক শাহদাৎ শাহ, শামীমা ইসলাম, চয়নিকা রানী দাস সহ গৌরীপুরের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
আ্যওয়ার্ডে ভূষিত  এই সাত গুণী ব্যক্তি হলেন
ভাষা ও সাহিত্যের জন্য  কিশোরগঞ্জ জেলার কবি ও সাহিত্যিক ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ শাহজাহান, সাংবাদিকতায় ময়মনসিংহ জেলার দৈনিক প্রথম আলোর নিজেস্ব প্রতিবেদক মোস্তাফিজুর রহমান, জামালপুর জেলা প্রেসক্লাবের সহসভাপতি, দি নিউ নেশন পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি ও মেলানন্দ উপজেলার দৈনিক ইত্তেফাক এর প্রতিনিধি মো. শাহ জামাল।
বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও গবেষণা ক্ষেত্রে নির্বাচিত হয়েছেন বগুড়া জেলার গবেষক, সাহিত্যিক ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি আবহাওয়া তথ্য পদ্ধতি উন্নতকরণ প্রকল্পের পরিচালক ড. মো. শাহ কামাল খান, শেরপুর জেলার গবেষক ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি এটিআই স্থাপন প্রকল্পের পরিচালক ড. মুহাম্মদ শরিফুল ইসলাম, সমাজসেবায় মাদক নিয়ন্ত্রণে বিশেষ অবদানের জন্য চট্রগাম জেলার কৃতি সন্তান ও খাগড়াছড়ি জেলার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হাসান মারুফ এবং রংপুর জেলার তৃতীয় লিঙ্গের সমাজসেবক আনোয়ারা ইসলাম রানী, একজন রুপান্তরিত নারী।
অ্যাওয়ার্ড কমিটির প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রায়হান উদ্দিন সরকার বলেন, ক্রিয়েটিভ এসোসিয়েশন ও এসিক এসোসিয়েশন এর সহযোগিতায়  সমাজের উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য এক বছর অন্তর অন্তর বীরাঙ্গনা সখিনা সিলভার পেন অ্যাওয়ার্ড ও খাজা উসমান খাঁ সিলভার পেন অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। জুন- জুলাই মাসে ”খাজা উসমান খাঁ সিলভার পেন অ্যাওয়ার্ড-২০২৫” প্রকাশ করার পর ডিসেম্বর মাসের যে কোনো একদিন ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের অডিটরিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে  “খাজা উসমান খাঁ সিলভার পেন অ্যাওয়ার্ড-২০২৩ ও ২০২৫” এর পদক ও সার্টিফিকেটসহ মোট ১৫জন বিজয়ীদের হাতে তুলে দেয়া হবে। তাছাড়া এ বছরে ’পেন অ্যাওয়ার্ড অ্যাফেয়ার্স-২০২৪ ও ২৫’ ম্যাগাজিন প্রকাশিত হবে।
ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলায় অবস্থিত “দি ইলেক্টোরাল কমিটি ফর খাজা উসমান খাঁ সিলভার পেন অ্যাওয়ার্ড” নামে সংগঠনটি  তিনটি লক্ষ্য নিয়ে কাজ করেছে- ঐতিহাসিক কেল্লা বোকাইনগর অধিপতি ঈশা খাঁর অনুগত রোমান্টিক হিরো খাজা উসমান খাঁর নামে এই অ্যাওয়ার্ড এর আয়োজন করা হয়। পেন অ্যাওয়ার্ড প্রদানের মাধ্যমে ১. ময়মনসিংহের গেীরীপুর উপজেলায় রোমান্টিক হিরো খাজা উসমান খাঁর ইতিহাস অবহিত করা, ইতিহাস ঐতিহ্যকে ধরে রাখা ও সমৃদ্ধ করা;  ২. ইলেক্টোরাল ভোটিং সিস্টেম প্রবর্তন ও পরীক্ষামূলকভারে এর প্রয়োগ ও সাফল্য এবং ইলেক্টোরাল ভোটের ফলাফলের মাধ্যমে অ্যওয়ার্ড বিজয়ীদের ঘোষনা। ৩. বৃহত্তর জেলাগুলোতে বা বিভাগে কোন বিশিষ্টজন উল্লেখিত চার বা একাধিক ক্ষেত্রে প্রশংসনীয় বিশেষ অবদান রেখেছেন; তাদের নিকট থেকে প্রোফাইল সংগ্রহ করে ইলেক্টোরাল ভোটের মাধ্যমে অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী ঘোষনা করা।
খাজা ওসমান ছিলেন উত্তর-পূর্ব বাংলার একজন পাঠান সর্দার এবং মহাযোদ্ধা। বারো ভূঁইয়াদের একজন হিসেবে তিনি উত্তর বঙ্গের বৃহত্তর ময়মনসিংহ এবং পরবর্তীতে দক্ষিণ সিলেটে নবাব সমতুল্য জমিদারি করেন। তিনি ছিলেন মানসিংহ এবং মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিদ্বন্দ্বী এবং বাংলার সর্বশেষ আফগান সর্দার ও শাসক। তার পরাজয়ের ফলে বাকী সকল পাঠানকে আত্মসমর্পণ করতে হয় এবং সিলেট অঞ্চলটি সুবাহ বাংলার অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তাকে বাংলার ইতিহাসের সবচেয়ে রোমান্টিক ব্যক্তিত্ব বলে মনে করা হয়। বাহারিস্তান-ই-গায়বী, তুজুক-ই-জাহাঙ্গীরী এবং আকবরনামার মতো বিখ্যাত গ্রন্থে তার জীবনী রয়েছে। ঈসা খাঁর সাথে কাজ করে, উসমান খা ঁ বৃহত্তর ময়মনসিংহ জয় করেন। তিনি তার রাজধানী গৌরীপুরে বোকাইনগর দুর্গ শহরটি তৈরি করতে সক্ষম হন এবং এর মাধ্যমে উত্তর-পূর্ব বাংলার উপর তার নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়। সম্রাট আকবরের মৃত্যুর পরে, ১৫৯৯ সালে উসমান বোকাইনগর দুর্গ পুনর্র্নিমাণ করে একে ২০,০০০ সৈন্যের একটি শক্তিশালী সামরিক ঘাঁটিতে পরিণত করতে সক্ষম হন। খাজা উসমান হাসানপুর এবং এগারোসিন্দুরে আরও দুটি দুর্গ প্রতিষ্ঠা করেছিলের। ১৬১১ সালের নভেম্বর মাসে উসমান খাঁ গৌরীপুরের বোকাইনগর ত্যাগ করে সিলেটে চলে আসে আসে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *