Dhaka ০৪:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নেত্রকোনার পূর্বধলায় ইমামতির দ্বন্ধে চাচাকে হত্যার অভিযোগে ভাতিজা শাহ্জাহানকে ঢাকার ধামরাই থেকে গ্রেপ্তার

প্রকাশের সময় 27/09/2024

নেত্রকোনার পূর্বধলায় ইমামতি নিয়ে দ্বন্ধে চাচাকে হত্যার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় এজাহারভূক্ত আসামী ভাতিজা শাহ্জাহান মিয়াকে (৩৫) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

শুক্রবার সকালে নেত্রকোনা জেলা পুলিশ ঢাকার ধামরাই এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে।

এর আগে গত মঙ্গলবার ফজেরের নামাজের ইমামতি করা নিয়ে দ্বন্ধে চাচা হাসিম উদ্দিনকে (৬৫) কিল-ঘুষি দেন ভাতিজা শাহ্জাহান মিয়া। এতে ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় চাচা হাসিম উদ্দিনের। নিহত হাসিম উদ্দিন উপজেলার আগিয়া ইউনিয়নের জটিয়াবর গ্রামের বাসিন্দা। আর অভিযুক্ত শাহ্জাহান মিয়া ওই গ্রামের মৃত আবদুল লতিফের ছেলে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলার জটিয়াবর মধ্যপাড়া জামে মসজিদের নির্ধারিত ইমাম মাওলানা শামীম হোসেন। তাঁর অনুপস্থিতিতে প্রায়ই মসজিদে নামাজ পড়াতেন গ্রামের হাসিম উদ্দিনের ছেলে হাফেজ মো. আজিজুল হক (৩৫)। গত মঙ্গলবার ফজরের নাম পড়ানোর সময় ইমাম শামীম হোসেন অনুপস্থিত ছিলেন। এ সময় আজিজুল হক নামাজ পড়াতে গেলে তাঁর সম্পর্কিত চাচাতো ভাই শাহজাহান মিয়া এতে আপত্তি তুলেন। আজিজুল ও শাহজাহানের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সম্প্রতি কিছু দিন ধরে বিরোধ চলছিল। শাহজাহান আজিজুলের পেছনে নামাজ না পড়ে মসজিদের বারান্দায় একা নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষ হলে মসজিদ প্রাঙ্গণে আজিজুল ও শাহজাহানের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এ সময় আজিজুলের বাবা হাসিম উদ্দিন উভয়কে থামতে বললে ভাতিজা শাহজাহান তাঁর ওপর চড়াও হন। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে শাহজাহান চাচা হাসিম উদ্দিনকে এলোপাথারি কিল-ঘুষি মারলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যান। এ দিকে হাসিম উদ্দিনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ ঘটনায় নিহত হাসিম উদ্দিনের স্ত্রী মাজেদা খাতুন বাদী হয়ে শাহ্জাহান মিয়াকে আসামি করে পূর্বধলা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

নেত্রকোনা জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মোঃ লুৎফর রহমান বলেন, ঘটনার পরপরই গ্রেপ্তার এড়াতে শাহ্জাহান মিয়া এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। চাঞ্চল্যকর ঘটনার আসামি গ্রেপ্তারে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও থানা পুলিশের সমন্বয়ে একটি টিম গঠন করে দেন পুলিশ সুপার মির্জা সায়েম মাহমুদ। গোপন সংবাদ ও অঅধুনিক তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় পলাতক শাহ্জাহানের অবস্থান ঢাকার ধামরাই এলাকার মালঞ্চ গ্রামে সনাক্ত করা হয়। পরে শুক্রবার সকালে ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মোঃ শাহানুর আলমের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে শাহজাহানকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

md rezaul hasan

Popular Post

নেত্রকোনায় বজ্রপাতে যুবকের মৃত্যু

নেত্রকোনার পূর্বধলায় ইমামতির দ্বন্ধে চাচাকে হত্যার অভিযোগে ভাতিজা শাহ্জাহানকে ঢাকার ধামরাই থেকে গ্রেপ্তার

Update Time : ১০:৩৮:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রকাশের সময় 27/09/2024

নেত্রকোনার পূর্বধলায় ইমামতি নিয়ে দ্বন্ধে চাচাকে হত্যার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় এজাহারভূক্ত আসামী ভাতিজা শাহ্জাহান মিয়াকে (৩৫) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

শুক্রবার সকালে নেত্রকোনা জেলা পুলিশ ঢাকার ধামরাই এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে।

এর আগে গত মঙ্গলবার ফজেরের নামাজের ইমামতি করা নিয়ে দ্বন্ধে চাচা হাসিম উদ্দিনকে (৬৫) কিল-ঘুষি দেন ভাতিজা শাহ্জাহান মিয়া। এতে ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় চাচা হাসিম উদ্দিনের। নিহত হাসিম উদ্দিন উপজেলার আগিয়া ইউনিয়নের জটিয়াবর গ্রামের বাসিন্দা। আর অভিযুক্ত শাহ্জাহান মিয়া ওই গ্রামের মৃত আবদুল লতিফের ছেলে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলার জটিয়াবর মধ্যপাড়া জামে মসজিদের নির্ধারিত ইমাম মাওলানা শামীম হোসেন। তাঁর অনুপস্থিতিতে প্রায়ই মসজিদে নামাজ পড়াতেন গ্রামের হাসিম উদ্দিনের ছেলে হাফেজ মো. আজিজুল হক (৩৫)। গত মঙ্গলবার ফজরের নাম পড়ানোর সময় ইমাম শামীম হোসেন অনুপস্থিত ছিলেন। এ সময় আজিজুল হক নামাজ পড়াতে গেলে তাঁর সম্পর্কিত চাচাতো ভাই শাহজাহান মিয়া এতে আপত্তি তুলেন। আজিজুল ও শাহজাহানের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সম্প্রতি কিছু দিন ধরে বিরোধ চলছিল। শাহজাহান আজিজুলের পেছনে নামাজ না পড়ে মসজিদের বারান্দায় একা নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষ হলে মসজিদ প্রাঙ্গণে আজিজুল ও শাহজাহানের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এ সময় আজিজুলের বাবা হাসিম উদ্দিন উভয়কে থামতে বললে ভাতিজা শাহজাহান তাঁর ওপর চড়াও হন। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে শাহজাহান চাচা হাসিম উদ্দিনকে এলোপাথারি কিল-ঘুষি মারলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যান। এ দিকে হাসিম উদ্দিনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ ঘটনায় নিহত হাসিম উদ্দিনের স্ত্রী মাজেদা খাতুন বাদী হয়ে শাহ্জাহান মিয়াকে আসামি করে পূর্বধলা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

নেত্রকোনা জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মোঃ লুৎফর রহমান বলেন, ঘটনার পরপরই গ্রেপ্তার এড়াতে শাহ্জাহান মিয়া এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। চাঞ্চল্যকর ঘটনার আসামি গ্রেপ্তারে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও থানা পুলিশের সমন্বয়ে একটি টিম গঠন করে দেন পুলিশ সুপার মির্জা সায়েম মাহমুদ। গোপন সংবাদ ও অঅধুনিক তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় পলাতক শাহ্জাহানের অবস্থান ঢাকার ধামরাই এলাকার মালঞ্চ গ্রামে সনাক্ত করা হয়। পরে শুক্রবার সকালে ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মোঃ শাহানুর আলমের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে শাহজাহানকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।