Dhaka ১০:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মদনে ৫ ইউপি চেয়ারম্যান পলাতক নাগরিক সেবা ব্যাহত

প্রকাশের সময় 09/10/2024

 

নেত্রকোনা মদনে সারাদেশে ছাত্র বৈষম্য আন্দোলনের মুখে (৫ আগস্ট) স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর আত্মগোপনে চলে যান মদন উপজেলার ৫ ইউপি চেয়ারম্যান।

কার্যালয় ছাড়ার প্রায় দুই মাস পেরিয়ে গেলেও তাদের অনেকেই এখনও কার্যালয়ে ফেরেননি। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের সেবা প্রার্থীরা। পাঁচ চেয়ারম্যান অনুপস্থিত ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে শূন্য।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মদন উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে কাইটাল, মদন, নায়েকপুর, মাঘান, গোবিন্দশ্রী এ ৫টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন আওয়ামী লীগের সমর্থিত।

তবে, নায়েকপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাসপেন্ড থাকায় গত এক বছরের বেশি সময় ধরে তার দায়িত্ব পালন করছেন ৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ হাদিস মিয়া। সেও পলাতক রয়েছে।

চেয়ারম্যান গন আওয়ামী লীগ সমর্থিত হওয়ায় হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর থেকেই গা-ঢাকা দেন ৫ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। এ ছাড়া ৫টি ইউনিয়নেরই অনেক ইউপি সদস্যও রয়েছেন আত্মগোপনে। সেইসঙ্গে বন্ধ রয়েছে অনেকের মোবাইল ফোন।

জনপ্রতিনিধিরা পরিষদে না থাকায় ব্যাহত হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে দেওয়া বিভিন্ন সনদ ও জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনের মতো নাগরিক সেবা কার্যক্রম। সেবা নিতে আসা সাধারণ জনগণ পড়েছেন চরম বিপাকে।

এসব ইউনিয়ন পরিষদের একাধিক সেবা প্রার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পরিষদে চেয়ারম্যান না থাকায় তারা দুর্ভোগে পড়েছেন। চেয়ারম্যান উপস্থিত থাকলে বেশিরভাগ সেবা তৎক্ষণাৎ পাওয়া যেত। চেয়্যারম্যান অনুপস্থিত থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করে তিনি যেখানে বলছেন সেখানে যেতে হচ্ছে । এতে ভোগান্তি যেমন বেড়েছে, সেইসঙ্গে খরচ হচ্ছে বাড়তি অর্থ ও সময়।

উপজেলার কাইটাইল ইউনিয়নের বাশরী গ্রামের বাসিন্দা রহমত মিয়া জানান, মৃত্যুনিবন্ধনের জন্য ইউপি কার্যালয়ে যান তিনি। পরিষদ থেকে অনলাইনে নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করলেও চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর প্রয়োজন। চেয়ারম্যান কার্যালয়ে না থাকায় তার স্বাক্ষর নেওয়া সম্ভব হয়নি। জনদুর্ভোগ নিরসনের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান তিনি।

অনুপস্থিতির বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যানদের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে কল করে তাদের মোবাইলের সংযোগ বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

মাঘান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম মাসুদ নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ইউনিয়ন পরিষদে না গিয়ে মদন পৌর সদরে তার ব্যক্তিগত চেম্বারে বসেই করছেন চেয়ারম্যানী। এতে ওই ইউনিয়নের নাগরিকদের পোহাতে হচ্ছে দুর্ভোগ। ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি ও আত্মগোপনে রয়েছেন। এরপর থেকেই চেয়ারম্যান শূন্য অবস্থাতেই চলছে এই ইউপি কার্যালয় ।

মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শাহ আলম মিয়া বলেন, পাঁচ ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতির বিষয়ে ইউপি সচিবগণ চেয়ারম্যানদের অনুপস্থিত দেখিয়ে আমার কাছে তথ্য প্রেরণ করেছে। এবং উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভা ও আইন শৃঙ্খলা সভার উপস্থিতির আলোকে তথ্য প্রেরণ করা হয়েছে।সেই মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

md rezaul hasan

Popular Post

ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টার প্রতিবাদে নেত্রকোনায় জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের বিক্ষোভ মিছিল

মদনে ৫ ইউপি চেয়ারম্যান পলাতক নাগরিক সেবা ব্যাহত

Update Time : ০৫:৪৮:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ অক্টোবর ২০২৪

প্রকাশের সময় 09/10/2024

 

নেত্রকোনা মদনে সারাদেশে ছাত্র বৈষম্য আন্দোলনের মুখে (৫ আগস্ট) স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর আত্মগোপনে চলে যান মদন উপজেলার ৫ ইউপি চেয়ারম্যান।

কার্যালয় ছাড়ার প্রায় দুই মাস পেরিয়ে গেলেও তাদের অনেকেই এখনও কার্যালয়ে ফেরেননি। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের সেবা প্রার্থীরা। পাঁচ চেয়ারম্যান অনুপস্থিত ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে শূন্য।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মদন উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে কাইটাল, মদন, নায়েকপুর, মাঘান, গোবিন্দশ্রী এ ৫টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন আওয়ামী লীগের সমর্থিত।

তবে, নায়েকপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাসপেন্ড থাকায় গত এক বছরের বেশি সময় ধরে তার দায়িত্ব পালন করছেন ৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ হাদিস মিয়া। সেও পলাতক রয়েছে।

চেয়ারম্যান গন আওয়ামী লীগ সমর্থিত হওয়ায় হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর থেকেই গা-ঢাকা দেন ৫ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। এ ছাড়া ৫টি ইউনিয়নেরই অনেক ইউপি সদস্যও রয়েছেন আত্মগোপনে। সেইসঙ্গে বন্ধ রয়েছে অনেকের মোবাইল ফোন।

জনপ্রতিনিধিরা পরিষদে না থাকায় ব্যাহত হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে দেওয়া বিভিন্ন সনদ ও জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনের মতো নাগরিক সেবা কার্যক্রম। সেবা নিতে আসা সাধারণ জনগণ পড়েছেন চরম বিপাকে।

এসব ইউনিয়ন পরিষদের একাধিক সেবা প্রার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পরিষদে চেয়ারম্যান না থাকায় তারা দুর্ভোগে পড়েছেন। চেয়ারম্যান উপস্থিত থাকলে বেশিরভাগ সেবা তৎক্ষণাৎ পাওয়া যেত। চেয়্যারম্যান অনুপস্থিত থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করে তিনি যেখানে বলছেন সেখানে যেতে হচ্ছে । এতে ভোগান্তি যেমন বেড়েছে, সেইসঙ্গে খরচ হচ্ছে বাড়তি অর্থ ও সময়।

উপজেলার কাইটাইল ইউনিয়নের বাশরী গ্রামের বাসিন্দা রহমত মিয়া জানান, মৃত্যুনিবন্ধনের জন্য ইউপি কার্যালয়ে যান তিনি। পরিষদ থেকে অনলাইনে নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করলেও চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর প্রয়োজন। চেয়ারম্যান কার্যালয়ে না থাকায় তার স্বাক্ষর নেওয়া সম্ভব হয়নি। জনদুর্ভোগ নিরসনের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান তিনি।

অনুপস্থিতির বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যানদের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে কল করে তাদের মোবাইলের সংযোগ বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

মাঘান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম মাসুদ নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ইউনিয়ন পরিষদে না গিয়ে মদন পৌর সদরে তার ব্যক্তিগত চেম্বারে বসেই করছেন চেয়ারম্যানী। এতে ওই ইউনিয়নের নাগরিকদের পোহাতে হচ্ছে দুর্ভোগ। ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি ও আত্মগোপনে রয়েছেন। এরপর থেকেই চেয়ারম্যান শূন্য অবস্থাতেই চলছে এই ইউপি কার্যালয় ।

মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শাহ আলম মিয়া বলেন, পাঁচ ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতির বিষয়ে ইউপি সচিবগণ চেয়ারম্যানদের অনুপস্থিত দেখিয়ে আমার কাছে তথ্য প্রেরণ করেছে। এবং উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভা ও আইন শৃঙ্খলা সভার উপস্থিতির আলোকে তথ্য প্রেরণ করা হয়েছে।সেই মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।