Dhaka ১১:২৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নির্বাহী কর্মকর্তার পরিকল্পনায় পাল্টে গেছে মদন উপজেলা পরিষদ চত্বরের দৃশ্যপট

প্রকাশের সময় 08/07/2024

নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ্ আলম মিয়া’র পরিকল্পনায় পাল্টে গেছে মদন উপজেলা পরিষদ চত্বরের দৃশ্যপট। তার ছোয়ায় এখন নান্দনিক রূপে সজ্জিত পরিষদ চত্বরটি।

পুরাতন ভবন অপসারণ, মাটি ভরাট, নতুন করে রাস্তা নির্মাণ ও গাছে গাছে আল্পনা একে সজ্জিত করায় পরিষদ চত্বর এখন মিনি পার্কের রূপ নিয়েছে। এতে সুন্দর ও মনোরম পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ায় সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে স্থানটি ক্রমেই আকর্ষনীয় হয়ে উঠছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৩ সালে মদন থানাকে উপজেলায় উন্নীত করা হয়। ৮টি ইউনিয়ন নিয়ে চলছে মদন উপজেলার কার্যক্রম। ২০০১ সালের ১১ জুলাই মদন থানা সদরকে পৌরসভায় উন্নীত করা হয়। সুদুর প্রসারী পরিকল্পনার অভাব এবং অবকাঠামো দিক থেকে পিছিয়ে থাকায় মদন উপজেলা পরিষদ চত্বরের অবস্থা ছিল খুবই শোচনীয়। প্রতিটি অফিসের কার্যক্রম পরিচালিত হতো ভিন্ন ভিন্ন জরাজীর্ণ ভবন থেকে। কোনো রকমে চলছিল সরকারী সেবা প্রদান কার্যক্রম। জনগণের দাবীর প্রেক্ষিতে ২০২২ সালে ৫ তলাবিশিষ্ট একটি নতুন প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ করা হয়। এতে কিছুটা হলেও পরিবর্তন আসে। কিন্তু নতুন ভবনের সামনে পুরাতন ভাঙা ঘর, পাবলিক হল মাঠ, কোয়ার্টারের সামনে একাধিক গর্ত এবং রাস্তা থেকে তিন ফুট নিচু থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই কাদাপানি জমে নানা সমস্যার সৃষ্টি হতো।

এসব সমস্যা সমাধানসহ উপজেলা পরিষদ চত্বর সৌন্দর্য বর্ধনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন বর্তমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শাহ্ আলম মিয়া। পরিষদ চত্বরে সৌন্দর্য বৃদ্ধি ও নান্দনিক রূপ দিতে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহন করে উপজেলা পরিষদ চত্বর, কোয়ার্টারের সামনে, প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও নির্বাচন অফিসের সামনে এবং পাবলিক হল মাঠে মাটি ভরাটের জন্য ৮ লাখ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।

এ ছাড়াও উপজেলা পরিষদ চত্বরে অভ্যন্তরীণ রাস্তা নির্মাণের জন্য ১০ লাখ টাকা এবং সামনে গাছে গাছে আল্পনা আকতে ও রি-জিনিয়াস কিন্ডার গার্টেন স্কুল মেরামত করার জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়।

ইতিমধ্যে পরিষদ চত্বরে মাটি ভরাট ও গাছে আল্পনা আঁকার কাজ সম্পন্ন ও পরিষদ চত্বরে অভ্যন্তরীণ রাস্তার নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে চমৎকার শহীদ মিনার। দীর্ঘদিনের জরাজীর্ণ মুক্তমঞ্চে লেগেছে সংস্কারের ছোঁয়া। পরিষদের বাউন্ডারি দেওয়াল হয়েছে নতুন রংয়ে রাঙ্গানো। পরিষদের গাছ গুলো পাখির অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। সন্ধ্যায় পাখির কলকাকলিতে সেখানে অন্যরকম পরিবেশ সৃষ্টি হয়। পরিষদ চত্বর নবরূপে সজ্জিত হওয়ায় স্থানটি সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে জায়গাটি হয়ে উঠেছে খুবই আকর্ষনীয়। এক কথায় বলতে গেলে পরিষদ চত্বর এখন একটি মিনি পার্ক হিসাবে রূপ নিয়েছে। শিশু কিশোর আবাল বৃদ্ধ বনিতারা এখানে এসে ছবি তুলছেন।

উপজেলা পরিষদে সেবা নিতে আসা মোতাহার হোসেন, জাকির হোসেনসহ অনেকেই জানান, ‘দীর্ঘদিন ধরে মদন উপজেলা পরিষদ চত্বরের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। বর্ষা আসলে তো পানি জমে থাকায় অফিসে যাওয়াটা কষ্ট হতো। এখন মাটি ভরাটসহ উন্নয়নমূলক কাজ করায় পরিষদ চত্বর খুবই সুন্দর হয়ে উঠেছে। সেবা গ্রহীতারা সুন্দর পরিবেশে সেবা গ্রহণ করছেন।

মদন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ হুমায়ূন কবির জানান, ‘উপজেলা পরিষদের সমন্বয় সভায় পরিষদ চত্বর সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য একাধিক প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। এরই প্রেক্ষিতে মাটি ভরাট, নতুন রাস্তা নির্মাণ ও গাছে গাছে আল্পনা আকার কাজ বাস্তবায়ন করা হয়েছে।

মদন উপজেলা প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া পিয়াল জানান, ‘পরিষদের চত্বর সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য সমন্বয় সভায় সর্বসম্মতিক্রমে নানা প্রকল্প গ্রহন করা হলে ঠিকাদারের মাধ্যমে গাছগুলোতে আল্পনা আকাঁ, উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক পরিচালিত রি-জিনিয়াস কিন্ডার গার্টেন স্কুল মেয়ামত ও রংকরণ কাজ সমাপ্ত করা হয়েছে। পরিষদ চত্বরের রাস্তা নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।

মদন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুল হান্নান তালুকদার শামীম জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একজন মেধাবী ও দক্ষ কর্মকর্তা। উনার চিন্তা ও পরিকল্পনায় উপজেলা পরিষদ চত্বরটি এখন নান্দনিক উপজেলা পরিষদ হিসেবে রূপ নিয়েছে।

মদন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শাহ্ আলম মিয়া বলেন, ‘যোগদানের পর পরিষদের বেহাল অবস্থার সমাধানে সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ করি। বিধি মোতাবেক উপজেলা প্রকৌশলী ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কাজগুলো বাস্তবায়ন করেন। আমি প্রকল্পগুলোর সঠিক বাস্তবায়ন তদারকির জন্য কমিটি করে দেই এবং কাজ শেষে তারা সন্তোষজনক প্রতিবেদন দাখিল করলে বিল প্রদান করা হয়। বর্তমানে উপজেলা পরিষদের চত্বরটি দেখার মতো। অনেকেই এর সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসেন।

 

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

md rezaul hasan

Popular Post

ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টার প্রতিবাদে নেত্রকোনায় জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের বিক্ষোভ মিছিল

নির্বাহী কর্মকর্তার পরিকল্পনায় পাল্টে গেছে মদন উপজেলা পরিষদ চত্বরের দৃশ্যপট

Update Time : ০২:২৪:২০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জুলাই ২০২৪

প্রকাশের সময় 08/07/2024

নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ্ আলম মিয়া’র পরিকল্পনায় পাল্টে গেছে মদন উপজেলা পরিষদ চত্বরের দৃশ্যপট। তার ছোয়ায় এখন নান্দনিক রূপে সজ্জিত পরিষদ চত্বরটি।

পুরাতন ভবন অপসারণ, মাটি ভরাট, নতুন করে রাস্তা নির্মাণ ও গাছে গাছে আল্পনা একে সজ্জিত করায় পরিষদ চত্বর এখন মিনি পার্কের রূপ নিয়েছে। এতে সুন্দর ও মনোরম পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ায় সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে স্থানটি ক্রমেই আকর্ষনীয় হয়ে উঠছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৩ সালে মদন থানাকে উপজেলায় উন্নীত করা হয়। ৮টি ইউনিয়ন নিয়ে চলছে মদন উপজেলার কার্যক্রম। ২০০১ সালের ১১ জুলাই মদন থানা সদরকে পৌরসভায় উন্নীত করা হয়। সুদুর প্রসারী পরিকল্পনার অভাব এবং অবকাঠামো দিক থেকে পিছিয়ে থাকায় মদন উপজেলা পরিষদ চত্বরের অবস্থা ছিল খুবই শোচনীয়। প্রতিটি অফিসের কার্যক্রম পরিচালিত হতো ভিন্ন ভিন্ন জরাজীর্ণ ভবন থেকে। কোনো রকমে চলছিল সরকারী সেবা প্রদান কার্যক্রম। জনগণের দাবীর প্রেক্ষিতে ২০২২ সালে ৫ তলাবিশিষ্ট একটি নতুন প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ করা হয়। এতে কিছুটা হলেও পরিবর্তন আসে। কিন্তু নতুন ভবনের সামনে পুরাতন ভাঙা ঘর, পাবলিক হল মাঠ, কোয়ার্টারের সামনে একাধিক গর্ত এবং রাস্তা থেকে তিন ফুট নিচু থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই কাদাপানি জমে নানা সমস্যার সৃষ্টি হতো।

এসব সমস্যা সমাধানসহ উপজেলা পরিষদ চত্বর সৌন্দর্য বর্ধনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন বর্তমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শাহ্ আলম মিয়া। পরিষদ চত্বরে সৌন্দর্য বৃদ্ধি ও নান্দনিক রূপ দিতে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহন করে উপজেলা পরিষদ চত্বর, কোয়ার্টারের সামনে, প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও নির্বাচন অফিসের সামনে এবং পাবলিক হল মাঠে মাটি ভরাটের জন্য ৮ লাখ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।

এ ছাড়াও উপজেলা পরিষদ চত্বরে অভ্যন্তরীণ রাস্তা নির্মাণের জন্য ১০ লাখ টাকা এবং সামনে গাছে গাছে আল্পনা আকতে ও রি-জিনিয়াস কিন্ডার গার্টেন স্কুল মেরামত করার জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়।

ইতিমধ্যে পরিষদ চত্বরে মাটি ভরাট ও গাছে আল্পনা আঁকার কাজ সম্পন্ন ও পরিষদ চত্বরে অভ্যন্তরীণ রাস্তার নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে চমৎকার শহীদ মিনার। দীর্ঘদিনের জরাজীর্ণ মুক্তমঞ্চে লেগেছে সংস্কারের ছোঁয়া। পরিষদের বাউন্ডারি দেওয়াল হয়েছে নতুন রংয়ে রাঙ্গানো। পরিষদের গাছ গুলো পাখির অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। সন্ধ্যায় পাখির কলকাকলিতে সেখানে অন্যরকম পরিবেশ সৃষ্টি হয়। পরিষদ চত্বর নবরূপে সজ্জিত হওয়ায় স্থানটি সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে জায়গাটি হয়ে উঠেছে খুবই আকর্ষনীয়। এক কথায় বলতে গেলে পরিষদ চত্বর এখন একটি মিনি পার্ক হিসাবে রূপ নিয়েছে। শিশু কিশোর আবাল বৃদ্ধ বনিতারা এখানে এসে ছবি তুলছেন।

উপজেলা পরিষদে সেবা নিতে আসা মোতাহার হোসেন, জাকির হোসেনসহ অনেকেই জানান, ‘দীর্ঘদিন ধরে মদন উপজেলা পরিষদ চত্বরের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। বর্ষা আসলে তো পানি জমে থাকায় অফিসে যাওয়াটা কষ্ট হতো। এখন মাটি ভরাটসহ উন্নয়নমূলক কাজ করায় পরিষদ চত্বর খুবই সুন্দর হয়ে উঠেছে। সেবা গ্রহীতারা সুন্দর পরিবেশে সেবা গ্রহণ করছেন।

মদন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ হুমায়ূন কবির জানান, ‘উপজেলা পরিষদের সমন্বয় সভায় পরিষদ চত্বর সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য একাধিক প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। এরই প্রেক্ষিতে মাটি ভরাট, নতুন রাস্তা নির্মাণ ও গাছে গাছে আল্পনা আকার কাজ বাস্তবায়ন করা হয়েছে।

মদন উপজেলা প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া পিয়াল জানান, ‘পরিষদের চত্বর সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য সমন্বয় সভায় সর্বসম্মতিক্রমে নানা প্রকল্প গ্রহন করা হলে ঠিকাদারের মাধ্যমে গাছগুলোতে আল্পনা আকাঁ, উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক পরিচালিত রি-জিনিয়াস কিন্ডার গার্টেন স্কুল মেয়ামত ও রংকরণ কাজ সমাপ্ত করা হয়েছে। পরিষদ চত্বরের রাস্তা নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।

মদন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুল হান্নান তালুকদার শামীম জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একজন মেধাবী ও দক্ষ কর্মকর্তা। উনার চিন্তা ও পরিকল্পনায় উপজেলা পরিষদ চত্বরটি এখন নান্দনিক উপজেলা পরিষদ হিসেবে রূপ নিয়েছে।

মদন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শাহ্ আলম মিয়া বলেন, ‘যোগদানের পর পরিষদের বেহাল অবস্থার সমাধানে সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ করি। বিধি মোতাবেক উপজেলা প্রকৌশলী ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কাজগুলো বাস্তবায়ন করেন। আমি প্রকল্পগুলোর সঠিক বাস্তবায়ন তদারকির জন্য কমিটি করে দেই এবং কাজ শেষে তারা সন্তোষজনক প্রতিবেদন দাখিল করলে বিল প্রদান করা হয়। বর্তমানে উপজেলা পরিষদের চত্বরটি দেখার মতো। অনেকেই এর সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসেন।